বাংলাদেশের সংবিধান

 বাংলাদেশের সংবিধান



সংশোধন পদ্ধতির ভিত্তিতে সংবিধান দুই প্রকার। যথাঃ ১. সুপরিবর্তনীয় ও ২. দুষ্পরিবর্তনীয়। বিশ্বের সবচেয়ে বড় সংবিধান ভারতের এং সবচেয়ে ছোট সংবিধান মোনাকোর। ( যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধান ৪৪০০ শব্দ বিশিষ্ট, মোনাকোর সংবিধান ৩৮১৪ শব্দ বিশিষ্ট।) বাংলাদেশের সংবিধানের প্রস্তাবনা- ১ টি, মূলনীতি- ৪ টি, তফসিল- ৭টি, অনুচ্ছেদ- ১৫৩ টি। বাংলাদেশের সংবিধান রচিত হয় যুক্তরাজ্য ও ভারতের সংবিধানের আলোকে।

সংবিধান প্রণয়নের সংক্ষিপ্ত ইতিহাস

রাষ্ট্রপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭২ সালের ১১ জানুয়ারি অস্থায়ী সংবিধান আদেশ জারি করেন। এই আদেশবলে জনগণের অভিপ্রায় অনুযায়ী সংসদীয় গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা গৃহীত হয় এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান প্রধানমন্ত্রীর দ্বায়িত্বভার গ্রহন করেন। পরে রাষ্ট্রপতি বিচারপতি আবু সাঈদ চৌধুরী ১৯৭২ সালের ২৩ শে মার্চ গণপরিষদ আদেশ জারি করেন। এবং তা ১৯৭১ সালের ২৬শে মার্চ থেকে কার্যকরী বলে ঘোষিত হয়। ১৯৭০ সালের জাতীয় পরিষদ এং ১৯৭১ সালের প্রাদেশিক পরিষদ সদস্যদের সমন্বয়ে গণপরিষদ গঠিত হয় যার সদস্য ছিলেন ৪০৩ জন। ৪০৩ জনের মধ্যে ৪০০ জন সদস্য ছিলেন আওয়ামী লীগের, ১ জন ন্যাপের এবং ২ জন ছিলেন নির্দলীয়। ১০ এপ্রিল, ১৯৭২ সালে অনুষ্ঠিত গণপরিষদের প্রথম অধিবেশনের সভাপতি ছিলেন মাওলানা আব্দুর রশীদ তর্কবাগীশ। স্পিকার নির্বাচিত হন- শাহ আবদুল হামিদ এবং ডেপুটি স্পিকার নির্বাচিত হন মোহাম্মদ উল্লাহ।

সংবিধান প্রণয়নের উদ্দেশ্যে ১১ এপ্রিল, ১৯৭২ সালে আইনমন্ত্রী ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বে ৩৪ সদস্য বিশিষ্ট সংবিধান কমিটি গঠিত হয়। এ কমিটির ওকমাত্র মহিলা সদস্য ছিলেন বেগম রাজিয়া বানু এবং একিমাত্র বিরোধী দলীয় সদস্য ছিলেন সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত। সংবিধান কমিটির প্রথম বৈঠক অনুষ্ঠিত হয় ১৯৭২ সালের ১৭ এপ্রিল। জনগণের মতামতের ভিত্তিতে বাংলাদেশ বিষয়াবলী বাংলাদেশের সংবিধান 144


বিভিন্ন মহল থেকে পাঠানো ৯৮টি প্রস্তাব গৃহীত হয়। যথাযথ মূল্যায়নের পর সংবিধান কমিটি ১০ জুন, ১৯৭২ সালে বিল আকারে সংবিধানের খসড়া প্রস্তুত করে এবং ১২ ই অক্টোবর, ১৯৭২ গণপরিষদের দ্বিতীয় অধিবেশনে খড়া সংবিধান উত্থাপিত হয়। ১৯৭২ সালের ৪ নভেম্বর গণপরিষদে বাংলাদেশের সংবিধান গৃহীত হয় এবং ১৬ ডিসেম্বর ১৯৭২ থেকে কার্যকর হয়। গণপরিষদে সংবিধানের উপর বক্তব্য রাখতে গিয়ে বঙ্গবন্ধু বলেন, “ এই সংবিধান শহীদের রক্তে লিখিত, এ সংবিধান সমগ্র জনগণের আশা আকাঙ্ক্ষার মূর্ত প্রতীক হয়ে বেঁচে থাকবে।” সংবিধান লেখার পর এর বাংলা ভাষারূপ পর্যালোচনার জন্য ড. আনিসুজ্জামানকে আহবায়ক, সৈয়দ আলী আহসান এবং প্রফেসর মযহারুল ইসলামকে ভাষা বিশেষজ্ঞ হিসেবে একটি কমিটি গঠন করে পর্যালোচনার ভার দেয়া হয়। সংবিধান প্রণয়ন কমিটির বৈঠকে সহযোগিতা করেন ব্রিটিশ আইনসভার খসড়া আইন প্রণেতা আই গাথরি। সংবিধান অলংকরণের জন্য পাঁচ সদস্যের কমিটি করা হয়েছিল যার প্রধান ছিলেন শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিন।


বাংলাদেশের সংবিধানের বৈশিষ্ট্য

•বাংলাদেশের সংবিধান রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ আইন। • এটি একটি লিখিত সংবিধান এবং দুষ্পরিবর্তনীয়। সংবিধান সংশোধন হয় মোট সংসদ সদস্যের দুই তৃতীয়াংশের ভোটে। •বাংলাদেশের সাংবিধানিক নাম- গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ (People's Republic of Bangladesh) •সংবিধানের প্রস্তাবনার উপর লেখা আছে “বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম”।

•সংবিধান প্রস্তাবনার মূল বিষয়- বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের চেতনা।

•সংবিধানের মূলনীতি- জতীয়তাবাদ, গণতন্ত্র, সমাজতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতা। •বাংলাদেশ সংবিধানে সরকার পদ্ধতি সংসদীয় এবং এককেন্দ্রীক । •বাংলাদেশের আইনসভা- এক কক্ষ বিশিষ্ট।

• প্রজাতন্ত্রের রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম (অনুচ্ছেদ-২ক)

•রাষ্ট্রভাষা বাংলা (অনুচ্ছেদ-৩) • জাতির পিতার প্রতিকৃতি সংরক্ষণ ও প্রদর্শন করার বিধান- ৪ক অনুচ্ছেদ।

• বাংলাদেশের সংবিধানে তিন ধরণের মালিকানার কথা বলা হয়েছে- রাষ্ট্রীয়,

সমবায় ও ব্যক্তিগত।



সংবিধানের উল্লেখযোগ্য অনুচ্ছেদসমূহ

  1. a
  2. a
  3. রাষ্ট্রভাষা বাংলা
  4.   জাতীয় সংগীত পতাকা ও প্রতীক 
  5. জাতির পিতার প্রতিকৃতি
  6. বাংলাদেশের রাজধানী
  7. নাগরিকত্ব (জাতি হিসেবে বাঙালী এবং জাতীয়তা হিসেবে ( বাংলাদেশি)
  8. রাষ্ট্রীয় মূলনীতি
  9. জাতীয়তাবাদ (বাঙালী জাতির ঐক্য ও সংহতি হইবে বাঙালী
  10. জাতীয়তাবাদের ভিত্তি)
  11. সমাজতন্ত্র ও শোষণমুক্তি
  12. গণতন্ত্র ও মানবাধিকার
  13. ধর্ম নিরপেক্ষতা ও ধর্মীয় স্বাধীনতা
  14. মালিকানার নীতি (রাষ্ট্রীয় সমবায় ও ব্যক্তিগত)
  15. মৌলিক প্রয়োজনের ব্যবস্থা
  16. গ্রামীণ উন্নয়ন ও কৃষি বিপ্লব
  17. অবৈতনিক ও বাধ্যতামূলক শিক্ষা
  18. জনস্বাস্থ্য ও নৈতিকতা
  19. পরিবেশ ও জীব-বৈচিত্র্য সংরক্ষণ ও উন্নয়ন
  20. সুযোগের সমতা
  21. নাগরিক ও সরকারী কর্মচারীদের কর্তব্য
  22. নির্বাহী বিভাগ হতে বিচার বিভাগের পৃথকীকরণ
  23. জাতীয় সংস্কৃতি
  24. উপজাতি, ক্ষুদ্র জাতিসত্তা, নৃ-গোষ্ঠী ও সম্প্রদায়ের সংস্কৃতি
  25. জাতীয় স্মৃতিনিদর্শন, প্রভৃতি
  26. আন্তর্জাতিক শান্তি, নিরাপত্তা ও সংহতির উন্নয়ন
  27. আইনের দৃষ্টিতে সমতা
  28. সর্বস্তরে নারী-পুরুষের সমান অধিকার
  29. জীবন ও ব্যক্তি স্বাধীনতার অধিকার রক্ষণ
  30. চলাফেরার স্বাধীনতা
  31. সমাবেশের স্বাধীনতা
  32. সংগঠনের স্বাধীনতা
  33. চিন্তা ও বিবেকের স্বাধীনতা এবং বাক-স্বাধীনতা
  34. ধর্মীয় স্বাধীনতা
  35. সম্পত্তির অধিকার
  36. রাষ্ট্রপতি
  37. ক্ষমা প্রদর্শনের অধিকার
  38. সংসদ-প্রতিষ্ঠা
  39. সংসদে নির্বাচিত হবার যোগ্যতা ও অযোগ্যতা
  40. ন্যায়পাল
  41. আইন প্রণয়ন পদ্ধতি
  42. অর্থবিল
  43. অধ্যাদেশপ্রণয়ন-ক্ষমতা
  44. সুপ্রীম কোর্ট প্রতিষ্ঠা
  45. প্রশাসনিক ট্রাইব্যুনালসমূহ
  46. নির্বাচন কমিশন প্রতিষ্ঠা
  47. সরকারি কর্ম কমিশন প্রতিষ্ঠা

Collected Form গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধান

More Details Coming Soon

Post a Comment

0 Comments